সর্বশেষ সংবাদ >>

যেসব রোগে পুঁইশাক খুব উপকারী

T24x7 প্রতিনিধি05/05/2019ত্রিপুরা

পুঁইশাক দেখতে যেমন সুন্দর, পুষ্টিগুণেও অনন্য। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আর খনিজ। ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-বিতেও সমৃদ্ধ পুঁইশাক। যে শাকের এত গুণ আর চাইলেই মিলছে যখন হাতের কাছে, তাহলে পুঁইশাক কেন প্রতিদিন নয়! আসুন জেনে নেই কোন কোন রোগে পুঁইশাক খুব উপকারী।

ডায়াবেটিস             

পুঁইশাকে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর মাত্রা কম থাকার কারণে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য এটি একটি উৎকৃষ্ট খাবার। এছাড়াও পুঁইশাক গ্রহণের ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। পুঁইশাকে বিদ্যমান উপাদানগুলো বেটা সেল(beta cells)এর কার্যকারিতা বাড়িয়ে ইনসুলিন উৎপাদনে সাহায্য করে যা ডায়াবেটিস থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।

ক্রনিক কন্সটিপেশন/ক্রনিক কোষ্ঠকাঠিন্য

পুঁইশাকে অধিক পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। এছাড়াও পুঁইশাক খাওয়ার কারণে মলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং মলত্যাগ করা সহজ হয়। এতে বিদ্যমান উপাদানগুলো অন্ত্র নালীকে পরিষ্কার রাখে এবং এর ক্ষয়ক্ষতি রোধ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য যদি খুব মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে যায় সেক্ষেত্রে ১০০ গ্রাম পুঁইশাকের রসের সাথে ১০০ গ্রাম পানি মিশিয়ে পান করলে সুফল পাওয়া যেতে পারে।

ছানি

লুটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পুঁইশাক চোখের বিভিন্ন সমস্যা থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। পুঁইশাকে আয়রন, ভিটামিন এ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এবং বিভিন্ন অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে যা চোখের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও বয়স্কদের দৃষ্টিশক্তি অটুট রাখতে, চোখের ছানি দূর করতে এবং ম্যাকুলার ডিজেনারেশন কমাতে এই উপাদানগুলো বেশ কার্যকরী। সুস্থ এবং সবল থাকার জন্য প্রতিদিনের খাবারে পুঁইশাক একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

ভিটামিন সি এবং আয়রন সমৃদ্ধ পুঁইশাক মেটাবোলিজম বা বিপাক ক্রিয়া সহজ করে ক্যালরি ক্ষয় করতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত মোটা হলে পুঁইশাক খাওয়া যেতে পারে কারণ এতে ওজন কমানোর উপাদান রয়েছে।

শুক্রাণুর সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে

পুঁইশাক খাওয়ার ফলে শুক্রাণুর সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। সবুজ শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড, আয়রন, জিঙ্ক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শুক্রাণুকে সুস্থ-সবল রাখতে সাহায্য করে।

হৃদরোগ

পুঁইশাকে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ফলিক এসিড ইত্যাদি পুষ্টিগুণ হৃদপিণ্ডের জন্য খুব উপকারী। এই উপাদানগুলো শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ধমনীতে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল জমতে বাঁধা দেয়। হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমাতে গবেষকরা পুঁইশাক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

চর্মরোগ

পুঁইশাকে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক কোঁচকানো বা বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। এটা ত্বকের উপরে বিষাক্ত উপাদান জমতে বাঁধা প্রদান করে এবং ত্বকের টিস্যুগুলোকে মজবুত করে তোলে। এই কারণে সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ডাক্তাররা প্রতিদিন পুঁইশাকের রস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

দাঁত সাদা করতে সাহায্য করে

পুঁইশাকে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম দাঁতকে মজবুত করে এবং দাঁতের দাগ দূর করে। এটা লালা উৎপাদনে সাহায্য করে মুখগহ্বরকে ক্ষতিকারক এসিড থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। এছাড়াও দাঁতকে প্রাকৃতিকভাবে আরও সাদা করতে পুঁইশাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ক্যান্সার

জার্নাল অফ ক্যান্সার এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফ্ল্যাভোনয়েডস সমৃদ্ধ পুঁইশাক গ্রহণ করলে নারীদের ওভারিয়ান ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এছাড়াও পুঁইশাকে ক্লোরোফিল, ক্যারোটিনয়েডস, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন, খনিজ লবণ, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এইসব উপাদান টিউমার সংগঠনে বাধা প্রদান করে এবং ক্যান্সার বৃদ্ধিকারক মলিকিউলস কমিয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

মস্তিষ্কের অস্বাভাবিকতা

বয়স বাড়ার সাথে সাথে মস্তিষ্কের কোষগুলো শিথিল হতে শুরু করে এবং এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত পুঁইশাক খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় কারণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্ককে ফ্রি র‍্যাডিকেল (মুক্তমূলক) এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।