সর্বশেষ সংবাদ >>

আবারো মাতৃগর্ভে মৃত শিশু, ঘটনা তেলিয়ামুড়া মহকুমায়। স্বাস্থ্যকর্মীদের থেকে সাহায্যে মেলেনি অভিযোগ মৃত শিশুর বাবার।

T24x7 প্রতিনিধি28/05/2021ত্রিপুরা

নয় মাস গর্ভে ধারণ করে শেষ পর্যন্ত সন্তানের জীবিত মুখ দেখলো না এক  গর্ভধারিনী হতভাগিনী  মা । ভ্রুণ থেকে তিলে তিলে যত্ন করে একটা শিশুর জন্মের আগে মাতৃগর্ভে মৃত্যুবরণ  যার খেসারত দিল  এক মা। একমাত্র তেলিয়ামুড়া মহকুমা স্বাস্থ্য দপ্তরের গাফিলতির  কারণে এমনটা অভিযোগ মৃত শিশুর পরিবারের। সরকারি স্বাস্থ্য দপ্তরের আদেশ থাকা সত্বেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই গর্ভধারিনী মা গর্ভধারণের নয় মাস কেটে গেলেও একবারের জন্যও আশা কর্মী কিংবা স্বাস্থ্য দপ্তরের কোন কর্মীকে ওই গর্ভধারিণী মায়ের পাশে যাননি। এমনটাই অভিযোগ করলেন এই পরিবারের গৃহকর্তা। 

ঘটনায় জানা যায়, তেলিয়ামুড়া মহকুমার মুঙ্গিয়াকামি ব্লকের অধীনে হলুদিয়া এডিসি ভিলেজের ক্ষীরোদ পাড়ার মনোরঞ্জন দেববর্মার স্ত্রী   বানতি দেববর্মা আজ থেকে নয় মাস আগেই গর্ভে ধারণ করে এক সন্তান। গর্ভ ধারণের পর একটি মায়ের যা যা প্রয়োজনীয় ঔষধ-পত্র ও টিকাকরণ কিংবা পরীক্ষা-নিরীক্ষা কিছুই করানো হয়নি। পরিবারের অভিযোগ এলাকায় আশাকর্মী থাকলেও কোনো এক অজ্ঞাত কারণে আশা কর্মী আজ পর্যন্ত ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেনি। যার ফলে এ গর্ভধারিনী মা-এর কোন প্রকার  ঔষধ পত্রও সহ সরকারী সুযোগ সুবিধা ভাগ্যে জুটেনি।  তার আরও একটি কারণ এলাকাটি এমনই এক দুর্গম জায়গায় যেখান থেকে  আসতে হলে খোয়াই  নদী পথ দিয়েই নৌকো দিয়ে তেলিয়ামুড়া শহরে আসতে হয়। এছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ নেই। আর যদি নৌকা পাওয়া না যায় তাহলে এই দুর্গম পাহাড়ি ৫ কিলোমিটার পথ নদীর কিনারায় কিনারায় হেঁটে হেঁটে তেলিয়ামুড়া আসতে হয়। আজ যখন প্রসব ব্যথায় কাতর ওই মা তখন কিছু জায়গা পায়ে হেঁটে তারপর নৌকো দিয়ে কোন ভাবে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছায় তারা। হাসপাতালে পৌঁছার পর চলে তার চিকিৎসা। পরবর্তী সময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের প্রচেষ্টায় ওই গর্ভবতী মায়ের  একটি  মৃত ছেলে শিশুর জন্ম হয়। 
এখন প্রশ্ন হলো ত্রিপুরা রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর আশা কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে একমাত্র গ্রামীণ বা প্রত্যন্ত এলাকায় বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের সেবামূলক কাজ করার জন্য। তাদের দেখাশোনা করা সময়মতো চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে আসা এবং শিশুর জন্ম গ্রহণ পর্যন্ত সেই যার যার এলাকার আশা কর্মীদের একটাই দায়িত্ব থাকে। কিন্তু ওই গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে এমন কোন একটাই ঘটনা ঘটল না। না পেল আশা কর্মীর দেখা, না পেল স্বাস্থ্যের পরিষেবা। যার খেসারত স্বরূপ জন্মের আগেই শিশুট মৃত্যু।  এখন দেখার বিষয় এই সমস্ত সংবাদ পরিবেশনের পর রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর এবং  খোয়াই জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন ঐ সকল আশাকর্মীদের বিরুদ্ধে।